নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ কিছুটা কমলেও শতকের ঘরেই দাম। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। অন্যদিকে ভরা মৌসুমেও সস্তি দিচ্ছে না সবজি। নতুন করে না বাড়লেও কমছে না দাম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, খিলগাঁও, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।
কারওয়ানবাজারের খুচরা বিক্রেতা জুয়েল মিয়া বলেন, ‘সরবরাহ বাড়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের দাম কমছে। শুক্রবার দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে, গত সপ্তাহে যা ছিল ১৩০ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে মিসরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, তিন দিন আগেও যা ছিল
৭০ টাকা কেজি।’ পাইকারি বিক্রেতা বিক্রমপুর বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফয়েজ বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুতে সংকট থাকলেও বর্তমানে সরবরাহ বাড়ছে, দামও কমছে। বর্তমানে পাইকারি বাজারে পাবনার দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায় এবং ফরিদপুরের মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।’
অবশ্য খিলগাঁও, মালিবাগ ও শান্তিনগর এলাকায় তার থেকে একটু বেশি দামেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মালিবাগ বাজারের পাইকারি প্রতিষ্ঠান খোরশেদ বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী মো. শাহবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এসব এলাকায় ভালোমানের মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পাইকারিতে ১০৫ টাকা কেজি এবং খুচরা পর্যায়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে।’
তবে পেঁয়াজের মৌসুমেও দাম শতকের ওপর থাকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ ক্রেতারা। যাত্রাবাড়ী বাজারের ক্রেতা আজাহারউদ্দিন বলেন, ‘মৌসুমে দেশি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকার নিচে থাকলে স্বাভাবিক ছিল। সেটা না হয়ে এখনো ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। এটা মোটেও স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়। এটা একেবারেই জুলুম।’
এদিকে শীতকালীন সবজিতে বাজার ভরপুর থাকলেও দাম কমছে না। অথচ শিম, টমেটো, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমে ভরপুর সব বাজার। এর মধ্যে সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে শশার দাম। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে যা ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা। শসার মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে করলা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।
এ ছাড়া শিম, গাজর ও বেগুনের কেজি ৪০ থেকে ৫০, শালগম ৩০ থেকে ৪০ এবং মুলা ২০ থেকে ২৫ টাকা। ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। নতুন গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে। যাত্রাবাড়ী বাজারের সবজি ক্রেতা সেলিম মোল্লা বলেন, ‘শীতের সময় সবজির দাম কম থাকে। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি পুরো উল্টো। শীতেও দাম দ্বিগুণ, কমার নামই নেই। মাছ-মাংসেরও প্রচুর দাম। কই যাব আমরা?’
যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার সমিতির সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘গাড়ি ভাড়ার কারণে কাঁচা তরকারির দাম বাড়ে-কমে। বর্তমানে পরিবহন খরচ বেশি পড়ছে বিধায় দামও একটু চড়া। তবে খুচরা বাজারে দাম তুলনামূলক একটু বেশিই রাখা হচ্ছে।’
0 মন্তব্য