মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
শুক্রবার মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর খুঁটির ওপর ৪০তম স্প্যান বসানো হয়েছে। স্প্যানটিকে দুই খুঁটির ওপর স্থায়ীভাবে বসানোর পরই পদ্মাসেতুর মূল অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়ে উঠলো পুরো ৬ কিলোমিটার।
আর বাকি থাকল মাওয়া প্রান্তের ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১তম স্প্যান বসানোর কাজ। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের আগেই ৪১তম স্প্যান (২-এফ) বসানোর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে প্রকল্প এলাকায় এখন কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।
বিজয়ের মাসে পদ্মা সেতুতে স্প্যান বসানোর কাজটি শতভাগ সম্পন্ন করা হবে। সময় যতো ঘনিয়ে আসছে পদ্মার দুই প্রান্তের মানুষের মধ্যে বাড়ছে আনন্দ।
৪০তম স্প্যানটিকে এরই মধ্যে নির্ধারিত খুঁটির কাছে নিয়ে গেছে ক্রেনবাহী ভাসমান জাহাজ 'তিয়ান-ই'। বৃহস্পতিবার রাতে স্প্যান বহন করা ভাসমান জাহাজটি খুঁটির কাছে নোঙর করে রাখা হয়।
প্রকল্পের দায়িত্বশীল প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টক জেটি থেকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ক্রেনবাহী ভাসমান জাহাজ 'তিয়ান-ই' ১৫০ মিটার দৈর্ঘের ৪০তম স্প্যানটিকে বহন করে নিয়ে যায় গন্তব্যে। এরপর দুই খুঁটির মাঝে পজিশনিং রাখা হয়েছে নোঙরে। শুক্রবার সকালে শীতের কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর শুরু হয় স্প্যান বসানোর কাজ। ক্রেনের সাহায্যে স্প্যানটিকে খুঁটির উচ্চতায় তোলা ও দুই খুঁটির উপরে স্থাপন করার ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোর পুরো ৬ কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো।
পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জানান, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এরপর একের পর এক খুঁটির ওপর বসানো হয় স্প্যান। জাজিরা প্রান্তের সবগুলো স্প্যান বসানো সম্পন্ন হলে মাওয়া প্রান্তে শুরু হয় স্প্যান বসানোর কাজ।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা সেতুতে সব মিলিয়ে ৪২টি খুঁটি রয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ২১টি ও জাজিরা প্রান্তে ২১টি। এই ৪২টি খুঁটির ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। এর মধ্যে ৪০টি খুঁটি থাকবে পানিতে আর দু'টি ডাঙায়। ডাঙায় থাকা দু'টি খুঁটি সংযোগ সড়কের সঙ্গে মূল সেতুকে যুক্ত করবে। ৬টি মডিউলে বিভক্ত থাকবে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এক হাজার ৪৭৮ মিটার ভায়াডাক্ট বা ঝুলন্ত পথ আর জাজিরা প্রান্তে থাকবে এক হাজার ৬৭০ মিটার।
বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, নিজস্ব অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দ্বিতল পদ্মা সেতুর পুরোটাই নির্মিত হবে স্টিল ও কংক্রিট স্ট্রাকচারে। সেতুর উপরে থাকবে কংক্রিট ঢালাইয়ের চার লেনের মহাসড়ক। আর নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন।
0 মন্তব্য